ডলার নিয়ে কারসাজি করার অপরাধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
তিনি জানান, মানি এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন চলছে। লেনদেনের বিভিন্ন তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করছি। বিষয়গুলো তদারকি করা হচ্ছে। তাদের কোনো অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
এখন পর্যন্ত রাজধানীর বিসমিল্লাহ মানি এক্সচেঞ্জ, অঙ্কন মানি এক্সচেঞ্জ এবং ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জসহ পাঁচটির লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার আভাস দিয়ে মুখপাত্র জানান, ডলার সংকটের কারণে আমরা আমদানিতে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছি। এখন ৩ মিলিয়নের (৩০ লাখ ডলার) বেশি আমদানি এলসি খোলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। আগে যেটা ছিল ৫ মিলিয়ন। দেখা যাচ্ছে অনেক এলসিতে অপ্রয়োজনীয় ও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। আমরা এগুলোর অনুমতি দিইনি। ফলে গত জুনের তুলনায় জুলাই মাসে আমাদের আমদানি এলসি অনেক কমেছে। এছাড়া রেমিটেন্স ও রপ্তানিও বেড়েছে। এসব দিক বিবেচনা করলে আমরা বলতে পারি বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র বলেন, বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে এগুলো বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, আশা করছি এটা অর্থনীতিতে সুফল বয়ে আনবে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা দরে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। গত মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা।
তবে খোলা বাজারে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকা থেকে ১১০ টাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংকগুলোতে এখন আমদানির জন্য ১০০ টাকার নিচে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০৭ থেকে ১০৯ টাকায় ডলার কিনে আমদানি দায় মেটাতে হচ্ছে। রেমিট্যান্সের জন্যও ব্যাংকগুলোকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার খোলা বাজারে ১০৯ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশে খোলা বাজারে ডলারের দাম প্রথমবারের মতো ১০০ টাকার ঘর পেরিয়ে যায় গত ১৭ মে। এরপর আবার কমে আসে। পরে গত ১৭ জুলাই ফের ১০০ টাকা অতিক্রম করে। গত সপ্তাহে নগদ ডলার ১১২ টাকায় উঠেছিল।
এসআই/এনএফ