ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ১২ জন রয়েছেন।
রাতভর চলা হামলায় আরও দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের কাছে উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে পারছে না। তাছাড়া ইসরায়েলি বোমা হামলায় উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামও ধ্বংস হয়ে গেছে।
সীমান্ত বন্ধ, রসদ প্রবেশে বাধা এবং কৃষিকাজে সমস্যা থাকায় খাদ্যপণ্যের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বহু পরিবারে দিনে এক বা দু’বারের বেশি খাবার জোটে না। নিরাপদ ও পরিষ্কার পানির অভাবে রান্না করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই দূষিত পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, ফলে রান্নাঘর বা রান্নার উপযুক্ত পরিবেশও আর নেই। শিশু ও বৃদ্ধদের অপুষ্টি বেড়ে গেছে। মহিলাদের ওপর চাপ বেড়েছে। কারণ, তারাই সাধারণত রান্নার দায়িত্বে থাকেন। স্বাস্থ্য সমস্যা ও শারীরিক দুর্বলতা দ্রুত বাড়ছে।
কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা চেষ্টা করছে প্রাথমিকভাবে শুকনো খাবার বা রেডি-টু-ইট খাবার সরবরাহ করতে। স্থানীয় লোকজন মাঝেমাঝে মিলিতভাবে বড় পাত্রে রান্না করে আশেপাশে ভাগ করে খাওয়াচ্ছেন।
গাজায় বর্তমানে যে মানবিক সংকট চলছে, তার কারণে অনেক পরিবারকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে কাঠের চুলা ব্যবহার করে রুটি ও অন্যান্য খাবার রান্না করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ সীমিত বা অনিয়মিত। গ্যাস সরবরাহও ব্যাহত হয়েছে। ফলে মানুষ বাধ্য হচ্ছে কাঠ, কাগজ, এমনকি পোড়ানো উপযোগী যেকোনো কিছু ব্যবহার করতে।
এই ধরনের চুলা সাধারণত মাটির বা ধাতুর তৈরি হয় এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ, শুকনো গাছের ডালপালা, এমনকি কখনও কখনও প্লাস্টিক বা অন্য যেকোনো দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়- যা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য দুই দিক থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ।
এই পরিস্থিতি মানবিক দিক থেকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ, এটা বোঝায় যে মৌলিক চাহিদাগুলোর (যেমন খাবার, জ্বালানি, নিরাপদ আশ্রয়) চরম অভাব চলছে।
আরপিকে/