পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ভোজ্যতেলসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হুইল চেয়ারে চেপে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শুক্রবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো বিশেষজ্ঞ ধারণা করতে পারেননি শ্রীলঙ্কার জনগণ যে তুষের আগুনে জ্বলছিল, তা বিস্ফোরণে পরিণত হবে। শ্রীলঙ্কার জাতীয় বীর, আজ জাতীয় ভিলেনে পরিণত হয়েছে
তিনি আরও বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ৩৮ টাকা। তারা মনে করছে, দুই টাকা তো কমই রাখা হয়েছে। ২০০ টাকা তো আর করা হয়নি। এই জাতীয় উপহাস দেশবাসী আর কত দেখবে? আমাদের ঈশান কোণে মেঘ জমেছে, আপনারা রক্ষা পাবেন না। এখনও সময় আছে। খোদার কাছে যেভাবে মাফ চান, জনগণের কাছেও তেমনি মাফ চান।’
খাদ্য দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন কাজ নয় উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা আছেন, ভালো-ভালো কথা বলছেন। অনেক পরামর্শদাতা আছে, যারা সৎ পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের পরামর্শ শোনা হয় কিনা জানিনা। সৎ জনরা বলছেন, মেগা প্রজেক্টের মায়া ছাড়েন, জনগণের কথা বলেন।’
শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘একটি সুন্দর-শিক্ষিত-শান্তির দেশে হঠাৎ জনগণ ফুঁসে উঠবে, এটি কেউ ভাবতে পারেনি। তাই যতই ঠাট্টা করেন না কেন, দেশে জনগণের এই তুষের আগুন কখন অগ্নি স্ফুলিঙ্গে পরিণত হবে তা টেরও পাবেন না। তখন কী করে দৌড়ে পালাবেন, কোথায় যাবেন? তখন ভারতও আপনাদের ঢুকতে দিবে না। সুতরাং আপনাদের জনগণের কাছে আসতে হবে, জনগণের কথা ভাবতে হবে।’
নিরপেক্ষ নির্বাচনে জোর দিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সর্বজনীন সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। আজ আমাদের সবার উদ্যোগ হতে হবে দেশের কল্যাণে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায়, দেশকে কল্যাণকর একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি জনগণের কথা ভাবুন। আমাদের সবাইকে নিয়ে বসুন, এক কাপ চা খাওয়ান। আমরা আপনাকে সৎ বুদ্ধি দেবো। সর্বদলীয় সরকারের নিয়ে চলুন আলোচনা করি। এমনও মানুষ আছে যারা দলকানা নয়, যারা দেশের জন্য সৎ পরামর্শ দেবে।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই, আমি গরিবের হাসপাতাল চালাই। যেখানে সবচেয়ে কম খরচে গরিবরা চিকিৎসা পায়। সেই হাসপাতালে ৮০ লাখ টাকা ট্যাক্স ধরা হয়েছে। এর কারণ হলো হাসপাতালের জন্য বেড, ম্যাট্রেস আমরা আমদানি করেছি। নামিদামি কোনো হাসপাতাল যদি এগুলো আমদানি করত, তাহলে ট্যাক্সই দিতে হতো না। অথচ যেহেতু আমার গরিবের হাসপাতাল তারা ৮০ লাখ টাকা ট্যাক্স ধরেছে। এই টাকা কোথা থেকে আসবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।