‘বাজারে এত তরমুজ, কিন্তু দাম তো কমে না। তরমুজ এখন বড়লোকগো খাওন। আমাগো লাইগা না।’- কথাগুলো বলছিলেন গ্রিন রোডের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন। গাড়ি চালক মোশারফ বাসার জন্য তরমুজ কিনতে কয়েকটি দোকানে ঘুরে দেখেন। কিন্তু বাড়তি দামের জন্য শেষমেশ তরমুজ কিনতে ব্যর্থ হন।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে মোশারফ বলেন, ‘বাসা থেকে একটা তরমুজ নিতে কইছিল। কয়েকটা দোকান ঘুরছি। কিন্তু এত দাম চায় যে আর কিনতে পারলাম না। কেজি ৫০ টাকার নিচে কেউ দিব না। অথচ আমার সামনে দিয়া অনেক সাহেবেরা দামও জিজ্ঞেস করে নাই, পকেট থেকে টাকা বের কইরা দিয়া তরমুজ নিয়া চইলা গেল।’
চৈত্রের গরমে ফলের মধ্যে তরমুজের চাহিদা একটু বেশি থাকে। সঙ্গে যোগ হয়েছে রমজানও। এবার বাজারে ফলটির সরবরাহ ব্যাপক। তারপরও তরমুজের গায়ে লাগা আগুন অনেক ক্রেতাকে স্বস্তি দিতে পারছে না।
শনিবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর কলাবাগান, গ্রিন রোড, কাঁঠাল বাগান ও পান্থপথ এলাকার ফলের দোকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তরমুজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে মিলছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। কিছু দোকানিকে পিস হিসেবেও তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে তরমুজের অভাব নেই। তবুও এত দাম বেশি। কেজিতে বিক্রি নিয়েও আপত্তি আছে ক্রেতাদের।
পান্থপথে ভ্রাম্যমাণ একটি দোকান থেকে তরমুজ কেনেন জাকির হোসেন। তিনি জানান, পাঁচ কেজি ওজনের একটা তরমুজ নিয়েছি ৩০০ টাকা দিয়ে। অথচ বছর তিনেক আগেও পিস হিসেবে এ তরমুজের দাম সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা ছিল। তরমুজ কেজিতে বিক্রি নিয়ে কত কথা হচ্ছে। অথচ এটি বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেই।
তরমুজের সরবরাহ নিয়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে বাড়তি দামের সঠিক কোনো কারণ ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না তারা। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, যে দামে কিনছেন, তার চেয়ে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করছেন। বাড়তি কোনো দাম রাখছেন না।
পিস হিসেবে কিনে কেজি ধরে তরমুজ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলাবাগানের এক ফল বিক্রেতা বলেন, আমরা কেজিতেও কিনি, আবার পিস হিসেবেও কিনি। আড়তে সবসময় পিস হিসেবে বিক্রি হয় না। পিস বা কেজিতে কেনার ক্ষেত্রে দামের খুব একটা তফাৎ হয় না।