বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার মানেই হচ্ছে তাদেরকে আরো বৈধতা দেয়া। এটা প্রমাণিত সত্য। যে কারণে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনেই বিএনপি যাচ্ছে না। খুব পরিষ্কার করে বলেছি।
সদ্য ঘোষিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশ এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের যৌথ উদ্যোগে ‘১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে সরকার ৪টি সংবাদপত্র রেখে বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে সাংবাদিকদের একটি অংশ এ দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন করছে।
গত এক যুগ ধরে একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এই দুইটাকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করা যায় না। এটা মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। গণতন্ত্রকে না পেলে সংবাপত্রের স্বাধীনতা কিভাবে পেতে পারি? সেজন্য এদেশের মানুষের এখন মূল লক্ষ্য হচ্ছে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, গণতন্ত্রকে ধবংস করেছে, বাকশাল করেছে তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পেতে পারে না- এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আওয়ামী লীগের চরিত্রের মধ্যে মানুষের ভিন্নমত সহ্য করার কোনো কিছু নেই। তাদের মধ্যে একটা বডি কেমেস্ট্রি কাজ করে। যেখানে একদলীয়, জোর করে সব কিছু আদায় করে নেয়া যেটা সবসময় একইভাবে আছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এখন আমাদের রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য, জাতির অস্তিত্বের জন্য, সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা- সব কিছুকে যদি রক্ষা করতে চাই তাহলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার এবং দেশকে মুক্ত করার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কোনো ঘাটতি নেই। নিঃসন্দেহে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবো এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।
বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের পার্থক্য তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, বিএনপির সাথে তফাতটা হচ্ছে- আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, সংবাপত্রের স্বাধীনতার হরণ করেছে, মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছে। আর বিএনপি সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছে, বহুলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিদ্যমান ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করার কথাও পূনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএফইউজের বিএফইউজের সাবেক সভাপতি সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, কায়কোবাদ মিলন, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।