রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু ঘটালে পশ্চিমাদের দিক থেকে মস্কোকে কঠোর জবাব দেয়া হবে বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস। খবর বিবিসির। ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন তার দেশের কৌশলগত বাহিনীকে (পারমাণবিক অস্ত্র বাহিনী) প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তারই জবাবে এই মন্তব্য করেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন, তার পারমাণবিক বাহিনী উচ্চ সতর্কতার মধ্যে রয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তার একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে এবং একইসঙ্গে এটি ইউক্রেনে সংগঠিত বাজে পরিস্থিত থেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও বটে। বেন ওয়ালেস বিবিসি ব্রেকফাস্টকে বলেন, পুতিনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তিনি এই সত্যটি ভুলে যেতে পারবেন না যে, এই মুহূর্তে তার একমাত্র সেরা বন্ধু বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেই মনে হচ্ছে… তাকে অবশ্যই বুঝতে হবে, তিনি অবশ্যই এখানে ইতিহাসের ভুল পক্ষকে সমর্থন করছেন।
যুক্তরাজ্য রাশিয়ার পারমাণবিক ভঙ্গিতে পরিবর্তনের মতো কিছু দেখছে না বলেও জানান বেন ওয়ালেস। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনও একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং পুতিন জেনে রাখবেন যে, পারমানবিক অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু ঘটলে পশ্চিমাদের দিক থেকেও সমপরিমাণ কিংবা কঠোর জবাব মিলবে। বেন ওয়ালেস বলেন, পারমাণবিক পরিস্থিতি উসকে দিতে যুক্তরাজ্য কিছু করবে না। তবে ‘এটি একটি বাক-যুদ্ধ এবং এটি যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় সেটি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে পুতিনের বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে মার্কিন দূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন এমনভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, পুতিনের ‘পারমাণবিক সতর্কাবস্থা বৃদ্ধি’ বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেছেন, এটি রাশিয়ার বানানো ও অপ্রয়োজনীয় হুমকি। এটি পুতিনের হুমকির ধারাবাহিকতামাত্র; পরবর্তী আগ্রাসনের ধাপ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না।
রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বিশ্বের সর্ববৃহৎ। কয়েক দিন আগেই রুশ নেতা ইউক্রেন অভিযান চালানোর ঘোষণায় বলেছিলেন, কেউ এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে এমন পরিণতি হবে, যা ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি। একে তখন অনেকেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
এবার আরেক ধাপ এগিয়ে পুতিন তার দেশের পরমাণু বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি শত্রুতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বেআইনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’ বিশেষ করে বৈশ্বিক ব্যাংকিং মেসেজ আদান-প্রদানের সুইফট সিস্টেম থেকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংককে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পুতিন তার অবস্থান আরও কঠোর করেছেন।