রমজানের আগে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়াতে না পেরে মিল মালিকরা সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছেন। পাড়া-মহল্লার অনেক দোকানেও তেল বিক্রি বন্ধ।
রাজধানীর নিত্যপণ্যের সরবরাহ কেন্দ্র পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার। এখানকার উদ্যোক্তারা বলছেন, ৪৮ বছরের ব্যবসার ইতিহাসে তারা এমন সংকট দেখেননি। দাম অস্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি এখন সরবরাহ সংকটও ব্যাপক। তাদের অভিযোগ, দাম দিয়েও তেল মিলছে না।
কর্মচারিদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিল তেল মিলছে না। বেশি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেও সরকারি সংস্থার অভিযানে জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাই দোকানে তেল বিক্রি না করার নোটিশ দিয়েছে মালিক।
খুচরা বিক্রেতারাও উভয় সংকটে। মগবাজার গাবতলা এলাকার অনেক দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করেছে মালিক। আর যারা বিক্রি করছেন, তাদের দাবি, দাম বাড়ায় তেলের চাহিদা অনেক কমেছে।
সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর দাবি নাকচ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মিল মালিকরা বলছেন, লোকসানে বিক্রি করা ব্যবসাবান্ধব সিদ্ধান্ত নয়। তবে বড় সংকটের আশঙ্কা দেখছেন না তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি, টিসিবির মাধ্যমে তেল বিক্রি বাড়ানোর দাবি করেছেন ভোক্তারা।
এর আগে সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বাড়াতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলো ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম তেলের বেড়েছে, তাই দেশের বাজারেও বাড়াতে হবে।
এর প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও সাড়া দেবে না সরকার।
তিনি আরো জানান, রমজানের আগে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো হবে না। সবশেষে দফায় দাম বাড়ানোর সময় ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছিল, রমজানের আগে আর দাম বাড়বে না। তাসত্বেও দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। মন্ত্রী বলেন, দাম বাড়লেও সহ্য করতে হবে ব্যবসায়ীদের।
সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৬৮ টাকা করা হয়। ২০ দিন যেতে না যেতেই দাম নতুন করে বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন তেল ব্যবসায়ীরা। ১ মার্চ থেকে বাড়তি দাম কার্যকরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তারা।
তবে দাম বাড়াতে হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। আর বাণিজ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর কার্যত সেটি নাকচ হয়ে গেল।