মিয়ানমারের একটি সৈকতে ভেসে এসেছে ১৪টি লাশ। দেশটির পুলিশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে। কিছু রোহিঙ্গা নৌকায় করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে একটি স্থানীয় উদ্ধারকারী সংগঠন জানিয়েছে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় একজন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী বলেছেন, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল থেকে নৌকায় করে যাচ্ছিলেন।
ইয়াঙ্গুন থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে পাথেইন জেলার পুলিশের মুখপাত্র লে. কর্নেল তুন শে বলেন, ১৪ জনের লাশ পাওয়া গেছে। আর নৌকার মালিকসহ ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পুলিশ স্টেশনে রাখা হয়েছে।
মিয়ানমার রেসকিউ অর্গানাইজেশন পাথেইনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গতকাল রোববার তাঁরা আটজনের লাশ দেখতে পেয়েছেন। সবাই রোহিঙ্গা শিশু। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী জানান, মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন নারী ও দুজন শিশু।
নৌকায় ছিলেন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুথিডাং, মংডু এবং সিতওয়ের বাসিন্দা। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে এএফপিকে জানান, নৌকায় ৬১ জন ছিলেন।
বিপজ্জনক যাত্রা
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গারা দেশটির সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতন-নিপীড়ন, জ্বালাও-পোড়াও এবং গণহত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয়ে দেশ ছেড়ে পালায়।
এখনো যাঁরা মিয়ানমারে রয়ে গেছেন, তাঁদের বাংলাদেশ থেকে সেখানে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না। পাশাপাশি বিভিন্ন অধিকার ও সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
প্রতিবছরই শত শত রোহিঙ্গা দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে পাড়ি জমাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ভ্রমণ করেন। সাগরপথে এ যাত্রায় কয়েক মাস সময় লেগে যায়। বেশির ভাগেরই পছন্দ তুলনামূলক সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়া।
আর যাঁরা ধরা পড়েন, তাঁদের বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। অধিকারকর্মীরা ভাষ্য, অস্বাস্থ্যকর এসব বন্দিশিবিরে গাদাগাদি অবস্থা। গত মাসে মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যের সুংহাই বাকাপ নামে অস্থায়ী একটি বন্দিশিবিরে দাঙ্গা বাঁধে। সেখান থেকে ৫৮২ জন রোহিঙ্গা দরজা ও বেড়া ভেঙে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ ৩৬২ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে শিবির থেকে আট কিলোমিটার দূরে ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়। সড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির কোনো যান তাঁদের চাপা দেয়।